বুড়িগঙ্গা রক্ষা করা না গেলে ঢাকাও রক্ষা করা যাবে না: বাপা
বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ ও দখলে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরাই বেশি দায়ী।দখল-দূষণ প্রতিনিয়ত চলছে আর সরকার তাকিয়ে দেখছে।এ নদীকে রক্ষা করা না গেলে ঢাকা শহর রক্ষা করা যাবে না।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে‘বুড়িগঙ্গা নদীর সর্বশেষ অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বুড়িগঙ্গা রিভার কিপারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে বুড়িগঙ্গা নদী রক্ষার দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন বলেন, দখল-দূষণ, পানির ও স্রোতের গতি কম, পলি বৃদ্ধিসহ নানা কারণে বুড়িগঙ্গা নদী ধ্বংস হচ্ছে।অতি দ্রুত নদী কেন্দ্রীক এসব ধ্বংসাত্বক কর্মকাণ্ড বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হলে বুড়িগঙ্গাকে রক্ষা করা যাবে না।নদী দূষণের জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে দায়ি করে তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গার বড় সর্বনাশ করছে হাজারীবাগের ট্যানারী শিল্প, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, নদী পাড়ের সব কলকারখানা।এসব প্রতিষ্ঠান সরকারি নিয়ম-রীতি মানছে না।সীমানা নির্ধারণের নামে নদী সঙ্কোচন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আব্দুল মতিন।
তিনি বলেন, নদীর প্রতি অবহেলার জন্য পৃথিবীর অনেক সভ্যতা বিলুপ্ত হয়েছে।বুড়িগঙ্গা ধ্বংস হলে ঢাকা শহর ধ্বংস হবে।নান্দনিক সৌন্দয্য, ফসল, মত্স্য সম্পদ, নৌ-পরিবহন, জনমানুষের জন্য জীবন-জীবিকা, আবাসন ও সু-স্বাস্থ্যের জন্য বুড়িগঙ্গাকে রক্ষা করতে হবে।
রিভার কিপার শরীফ জামিল বুড়িগঙ্গা দখলের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এখন বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয় চ্যানেলটির প্রতিটি জায়গায় দখল চলছে।রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে লালবাগের লোহারপুল ও কামরাঙ্গীর চর পর্যন্ত বিস্তৃত এ দ্বিতীয় চ্যানেলের বিভিন্ন জায়গায় সিএনজি স্টেশন, ইটভাটা ও আবাসনের জায়গা হচ্ছে।এ অবস্থা চলতে থাকলে বুড়িগঙ্গার মূল চ্যানেলটিও নিঃশেষ হয়ে যাবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
বাপার সহ-সভাপতি ফিরোজ আহমেদ বলেন, হাজারীবাগ ট্যানারিকে বুড়িগঙ্গা দূষণের অন্যতম কারণ।ট্যানারির মালিকেরা ব্যবসার নামে দূষণ করছেন।আর দায় নিচ্ছে সরকার।
সম্মেলনে সংগঠন দু’টোর পক্ষ থেকে যে দাবিগুলো উত্থাপন করা হয় সেগুলো হচ্ছে-উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ, নদীর তলা পরিস্কার, পানি দুষণ বন্ধ, নদীতে চলাচলকারী নৌযানের বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ, ঢাকা ওয়াসা সংগৃহিত বাসাবাড়ির বর্জ্যযুক্ত পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়া বন্ধ, নদীর উন্নয়নের জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি নাগরিক সমাজকে অন্তর্ভূক্ত করা, প্রয়োজনীয় মান ও ক্ষমতা সম্পন্ন সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা, দখল হওয়া খাল পুনরুদ্ধার করা, সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য নিষ্কাশন কর্মক্ষমতা বাড়ানো, বুড়িগঙ্গা টাস্কফোর্সকে কার্যকর রাখাসহ শক্তিশালী নদীকমিশন নিশ্চিত করতে হবে।