রমজানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৃষ্টিই ভরসা
বৃষ্টির উপর ভরসা করে রমজানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার উপায় খোঁজা হচ্ছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কম হবে। আর তাপমাত্রা কম হলে বিদ্যুতের চাহিদা থাকবে কম। আর সেই কম চাহিদা কিছুটা এদিক ওদিক করে সহনীয় পর্যায়ে লোডশেডিং রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে কিছুটা খরচ বাড়িয়ে সব তেল চালিত কেন্দ্র চালু রাখা হবে।
বিদ্যুতের লোডশেডিং এখন আছে। রমজানেও কিছুটা থাকবে। তবে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিচ্ছে সেহরি, ইফতার এবং তারাবির সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে। আর অন্য সময় সহনীয় পর্যায়ে লোডশেডিং রাখতে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে রমজানে সেহরি, ইফতার এবং তারাবি নামাজের সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বিতরণ কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শহর এলাকার পাশাপাশি গ্রামের জন্যও এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করতে বলা হয়েছে। কোথাও যান্ত্রিক সমস্যা হলে দ্রুত তা সারানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এজন্য ভ্র্যাম্যমান ট্রান্সফরমার প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। কোথাও ট্রান্সফরমার বিকল হলে তা লাগিয়ে সরবরাহ স্বাভাবিক করে মহৃল ট্রান্সফরমার ঠিক করতে হবে।
বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের লোডশেডিংও বেড়েছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় লোডশেডিং কমেছে। কিছুদিন আগেও যেখানে দিনে দুই থেকে তিনবার লোডশেডিং করা হতো। বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে তা বেড়ে পাঁচবারও হচ্ছে। বৃষ্টি হলেও গ্রামে এখনও আট থেকে ১০ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। তবে বিতরণব্যবস্থার ত্রুটির কারণে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ-বিভ্রাট দেখা দিতে পারে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নেও কাজ করা হচ্ছে।
পিডিবির উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেষ্টা হচ্ছে। তবে প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া বিতরণ ব্যবস্থার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। তিনি বলেন, পেট্রোবাংলা চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় অনেক কেন্দ্র থেকে উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। পিডিবি যদি তার ক্ষমতার পুরো বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারতো তবে লোডশেডিং কমে আসতো।
গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর বলেন, রমজান মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহের চেষ্টা করা হবে। এমনিতেই গতবারের তুলনায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বেশি করা হচ্ছে। বর্তমানে ৮৬ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট গ্যাস বিদ্যুতে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, প্রতি বছরের মতো এবারো রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে। রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ রাখা. বিপনী বিতানে আলোকসজ্জা না করা এবং শীততাপ যন্ত্র (এসি) না চালানোর জন্য দোকান মালিকদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও দোকান মালিকরা ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত আটটার পরিবর্তে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন। আর ১৬ রমজান থেকে সার্বক্ষনিক। সিএনজি ষ্টেশনও একইভাবে রেশনিং এর আওতায় থাকবে।
এছাড়া এলাকাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ কার্যক্রম তদারকির জন্য দল গঠন, গ্রীড সাবষ্টেশন এবং বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রন কক্ষগুলোয় সর্বোচ্চ চাহিদার সময় সিনিয়র প্রকৌশলীদের দায়িত্বে রাখার কথা বলা হয়েছে। একই এলাকায় বারবার লোডশেডিং না করা বা লোডশেডিং করতে হলেও শিডিউল আগে থেকেই জনগণকে অবহিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।