বড়পুকুরিয়াতে চারমাস কয়লা তোলা বন্ধ

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা উত্তোলন কারিগরি সমস্যার কারণে গত ৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভের নিচে কাজ করার সময় হঠাৎ করে পানির ফ্লো দেখা দিলে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞরা ভূগর্ভের নিচে পানির ফ্লো বন্ধ করে ওই ফেস থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেন। কর্তৃপক্ষ উত্তর দিকের ফেসের কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দিয়ে নতুন ফেস তৈরি করে সেখান থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করবেন। তবে গত ৪ মাস ধরে এ কারণে ভূগর্ভের নিচ থেকে কয়লা উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এদিকে নতুন ফেস থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য ভূগর্ভের নিচে কারিগরি কাজ এগিয়ে চলেছে। ভূগর্ভের নিচে নতুন ফেসের কয়লা উঠতে এখনো প্রায় ১ মাস সময় লাগতে পারে। এ কারণে ভূগর্ভের ওপরে মজুদকৃত কয়লা দিন দিন কমে যাচ্ছে। মজুদকৃত কয়লা প্রতি দিন বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ২৫০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করছে। মজুদকৃত কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ বিক্রি বন্ধ রেখে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য মজুদ রেখেছে। ভূগর্ভের নিচ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু না হওয়া পর্যন্ত কয়লা কোনোভাবে বিক্রি করতে পারবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তবে চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শেষে দিকে কয়লা উত্তোলন হতে পারে বলে না প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন খনিশ্রমিক জানান। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির দিকে চেয়ে থেকে উত্তরাঞ্চলের ইট-ভাটার মালিকেরা ভারত থেকে আমদানিকৃত কয়লা মজুদ করছে না। তারা ভাবছে বড়পুকুরিয়ার কয়লা অত্যন্ত উন্নতমানের, স্বল্প কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো যায়। এ কারণে ইট-ভাটার মালিকেরা সালফার মিশ্রিত ও পাথর মিশ্রিত কয়লা ক্রয় করছে না।
খবর নিয়ে জানা যায়, ভারতের একটি টিম বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে তাদের কয়লা নেয়ার জন্য যোগাযোগও করেছেন। কিন্তু তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সাব বলে দিয়েছেন ভারতের কয়লা ক্রয় করে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো মোটেই সম্ভব নয়। ইতিপূর্বে ৫০ হাজার টন ভারতীয় কয়লা আমদানি করে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর ফলে বয়লারের ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ বিকল ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে প্লান্টের কাজ করানো হয়। ফলে বড়পুকুরিয়ার কয়লা ছাড়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র আমদানি করা কয়লা দিয়ে চালানো সম্ভব নয়। যত দ্রুত সম্ভব বড়পুকুরিয়ার কয়লা উত্তোলন করে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করলে আগামী ইরি-বোরো মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে। এদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, ভূগর্ভের নিচে কাজ চলছে কিছুদিনের মধ্যেই কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে।