নেপালে ভূমিকম্পে নিহত ৭০০ ছাড়িয়েছে
শক্তিশালী ভূমিকম্পে নেপালে ধসে পড়েছে বহু ভবন, নিহত হয়েছেন প্রায় ৭০০ মানুষ।
৭ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্পে শনিবার কেঁপে উঠে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বিশাল এলাকা। ভারতে ভবন ধসে অন্তত একজন এবং বাংলাদেশে আতঙ্কের হুড়োহুড়িতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে রয়টার্স ৬৮৮ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র জিওলজিকাল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৫০ মাইল দূরে পোখরার কাছে ভূপৃষ্ঠের মাত্র ২ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র।
ভূমিকম্পে কাঠমান্ডুর অনেক ভবন ধসে পড়েছে, এর মধ্যে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্য ধারারা টাওয়ারও রয়েছে। ১৮৩২ সালে নির্মিত এই স্থাপনাটি কাঠমান্ডুর অন্যতম প্রধান পর্যটন স্থান।
কাঠমান্ডুর একটি পার্কে ভাস্কর্য ভেঙে পড়লে তার নিচে চাপা পড়ে এক নারী শিশু নিহত হয়েছে।
বিধ্বস্ত ভবন থেকে উদ্ধার করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে, এদের মধ্যে অনেকেই হাত-পাসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়েছেন।
কাঠমান্ডুতে অনেকেই ধসে পড়া ঘর-বাড়ির ছবি ইন্টারনেটে তুলেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিধ্বস্ত ভবনগুলোর আশেপাশে পাথরকুচি ছড়িয়ে আছে। রাস্তায় বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে এবং আতঙ্কিত মানুষজন বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করছে।
রয়টার্সের এক সাংবাদিক বলেছেন, অনেক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সবাই নেমে এসেছে রাস্তায়। অনেকে ছুটছে হাসপাতালের দিকে।
নেপালের তথ্যমন্ত্রী মিনেন্দ্র রিজাল উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন।
“আমাদের এখন আন্তর্জাতিক সব সম্প্রদায় থেকে সাহায্য প্রয়োজন। আমরা এখন যে দুর্যোগের মুখে পড়েছি, তা মোকাবেলায় যাদের বেশি জ্ঞান ও সরঞ্জাম রয়েছে, তাদের সাহায্য এখন আমাদের জন্য জরুরি।”
নেপালে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্পে, ওই দুর্যোগে সাড়ে ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
এনডিটিভি বলছে, রাজধানী দিল্লিতে ভূমিকম্পের কারণে আতঙ্কিত মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল। ভূমিকম্পটি প্রায় মিনিটখানেক সময় অনুভূত হয়।
এছাড়াও ভারতের পাটনা, লক্ষ্ণৌ, কলকাতা, জয়পুর, চন্ডিগড় এবং অন্যান্য বেশকিছু শহরে কম্পন অনুভূত হয়।
বিহার পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বড় ধরনের ওই ভূমিকম্পের পর বিপুল জনসংখ্যা অধ্যুষিত আতঙ্কিত মানুষের কলে টেলিফোন লাইনে জ্যামের সৃষ্টি হয়েছিল।
ওই কক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, “ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে আমরা এখনো কিছু জানি না। আমরা কলের বন্যায় ভেসে যাচ্ছি।”