ভোলায় নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভোলার ইলিশায় নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছে। এটি দেশের ২৯তম গ্যাস ক্ষেত্র। দেশীয় কোম্পানি বাপেক্সে এই গ্যাস আবিষ্কার করেছে।
সর্বোচ্চ ২০ কোটি ঘনফুট করে অন্তত ত্রিশ বছর এই গ্যাস ব্যবহার করা যাবে।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন গ্যাস ক্ষেত্রের ঘোষণা দেন। নতুন আবিষ্কার হওয়া গ্যাস ব্যবহার করতে আড়াই থেকে তিন বছর সময় লাগবে।
দ্বীপ জেলা ভোলায় এখনই দুটি গ্যাস ক্ষেত্র আছে। ভোলার ইলিশায় আরো একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হলো।
নতুন ক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ২৬ হাজার কোটি টাকা। ভোলায় তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে সবমিলিয়ে প্রায় তিন টিসিএফ গ্যাস মজুদ আছে। বাংলাদেশে এখন গড়ে বছরে এক টিসিএফ গ্যাস ব্যবহার হয়। অর্থাৎ ভোলার গ্যাস বর্তমান হারে তিনবছর ব্যবহার করার মতো।
রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসায় নতুন গ্যাসক্ষেত্রের ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই গ্যাস নতুন মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। সংকটের মধ্যে এটা আশার কথা। বেশ কয়েক বছর ভোলায় গ্যাস অনুসন্ধান চলছিল। নদীর ঠিক ওপরের দিকে নতুন গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কার হয়েছে। ভোলার অন্যান্য এলাকায়ও অনুসন্ধান করা হবে বলে তিনি জানান।
ইলিশার গ্যাস উত্তোলনে প্রসেস প্লান্ট করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বরিশাল, খুলনা ও ঢাকায় এই গ্যাস আনতে পাইপলাইনের পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।
ভোলায় স্থানীয়ভাবে গ্যাস ব্যবহারের যে দাবি তাও যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
নসরুল হামিদ বলেন, শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই গ্যাস ব্যবহার করা হবে। ভোলার সব গ্যাস নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। ভোলা থেকে ফেনী পর্যন্ত এবং ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনার দিকে পাইপলাইন তৈরি করা হবে। বরিশালের দিকে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হচ্ছে। বরিশাল থেকে এই পাইপলাইন মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ হয়ে ঢাকায় আসবে। আরেকটা লাইন যাবে খুলনার দিকে। পায়রা থেকে এলএনজি আনার যে পাইপ তার সাথে যুক্ত হবে। সারাদেশে একটা রিং ফেইজ করছি। যার মাধ্যমে প্রতিটি বিভাগীয় শহর পাইপ লাইনের আওতায় আসবে। সব বিভাগীয় শহরের অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস দেয়া হবে।
রাশিয়ার তেল গ্যাস উত্তোলনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে বাপেক্স টবগী-১, ভোলা নর্থ-২ এবং ইলিশা-১ কূপ খনন করে।
তিনস্তরে পরীক্ষা করে গ্যাসের অস্তিত্ব ও মজুদের পরিমাণ নিশ্চিত করে বাপেক্স। মার্চের শুরুতে ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে মালের হাট-সংলগ্ন প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় গ্যাস সন্ধানে খনন শুরু হয়। ২৪শে এপ্রিল ইলিশায় প্রাথমিকভাবে গ্যাসের সন্ধান পেলে খনন শেষে অন্যান্য পরীক্ষা শুরু করা হয়। ২৮শে এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে কূপের মুখে আগুন জ্বালিয়ে সেখানে প্রথম গ্যাসের অস্তিত্ব মেলে।