শেভরনের তিন গ্যাসক্ষেত্র কিনতে চায় পেট্রোবাংলা!

শেভরন পরিচালিত তিনটি গ্যাসক্ষেত্র কিনতে চায় পেট্রোবাংলা। এজন্য লাভ লোকসানের হিসাব করছে পেট্রোবাংলা। হিসাব যথার্থ করার জন্য পরামর্শক নিয়োগ দেয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইসতিয়াক আহমেদ এবিষয়ে এনার্জি বাংলাকে বলেন, সম্পদ, বিনিয়োগ, সক্ষমতা ইত্যাদি বিষয় পর্যালোচনা করেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কত গ্যাস আছে, কত দিন চলবে, পরিচালন খরচ কত, দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক হবে কিনা, পেট্রোবাংলার উপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ আসবে কিনা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, এটা শুধু পেট্রোবাংলার সিদ্ধান্ত নয়। সরকারেরও সিদ্ধান্ত। সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে পেট্রোবাংলা সেটা বাস্তবায়ন করবে।

সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন, শেভরনের বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়ার খবরের পর  পেট্রোবাংলা পর্যালোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রয়োজনে বিদেশী পরামর্শ দিয়ে  শেভরনের সম্পদ পর্যালোচনা করবে।

যদিও পেট্রোবাংলার কাছে বাংলাদেশের সকল বিদেশী গ্যাস কোম্পানি তাদের সার্বক্ষণিক হিসাব জমা দিতে বাধ্য থাকে। যৌথ কমিটির অনুমোদন ছাড়া বিনিয়োগ করতে পারে না। গ্যাসের হিসাবও দিতে বাধ্য থাকে।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির এই গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা পেট্রোবাংলার নেই। শেভরনের তিন ক্ষেত্র কিনে নিলেও তা পরিচালনা করার জন্য বিদেশীদের দারস্থ হতে হবে। এজন্য সে খরচও বিবেচনায় আনতে হবে। তবে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড, সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড ও বাপেক্স দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনা করছে।

উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) করে জালালাবাদ, মৌলভীবাজার ও বিবিয়ানা তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে পরিচালনা করছে। এগুলো যথাক্রমে ১৯৮৯, ১৯৯৭ ও ১৯৯৮ সালে গ্যাস আবিস্কার হয়েছে। যে হারে গ্যাস তোলা হচ্ছে, আর যে পরিমান নিশ্চিত মজুদ আছে তাতে আগামী ১০ বছরে এই তিন ক্ষেত্রর বর্তমান নিশ্চিত মজুদ গ্যাস শেষ হয়ে যাবে।

এই তিন গ্যাসক্ষেত্রে নিশ্চিত, সম্ভাব্য ও সম্ভাবনা মিলিয়ে প্রায় ১১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। এরমধ্যে  বিবিয়ানাতে আছে আট ট্রিলিয়ন ঘনফুট। মৌলভীবাজার ও জালালাবাদে দেড় টিসিএফ করে মজুদ আছে। এরমধ্যে নিশ্চিত মজুদ আছে তিন দশমিক আট ট্রিলিয়ন ঘনফুট। বিবিয়ানাতে নিশ্চিত মজুদ আছে তিন দশমিক ৪৮ টিসিএফ, মৌলভীবাজারে ১৪৬ বিসিএফ ও জালালাবাদে ১৮৯ বিসিএফ গ্যাস। এপর্যন্ত তিন ক্ষেত্র থেকে গ্যাস তোলা হয়েছে সাড়ে তিন টিসিএফ গ্যাস। বিবিয়ানা থেকে গ্যাস তোলা হয়েছে দুই দশমিক ২৭০ টিসিএফ, মৌলভীবাজার থেকে ২৮২ বিসিএফ এবং জালালাবাদ থেকে ৯৯৫ বিসিএফ গ্যাস।

বর্তমানে বিবিয়ানা থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে গড়ে ১২৪ কোটি ঘনফুট, যা বাংলাদেশে মোট গ্যাস উৎপাদনের ৪০ ভাগ। জালালাবাদ থেকে ২৭ কোটি ঘনফুট, যা মোট উৎপাদনের ১০ ভাগ এবং মৌলভিবাজার থেকে চার কোটি ঘনফুট গ্যাস, যা মোট উৎপাদনের দুই শতাংশ