সচেতনতার বিকল্প নেই গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড

অসাবধানতা ও গাফিলতির কারণে যে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তার প্রমাণ আরও একবার পাওয়া গেল। ২০ ফেব্রুয়ারি উত্তরায় নতুন ভাড়া করা ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে ওঠেন মার্কিন দূতাবাসের প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ (৫০)। গত শুক্রবার ওই ফ্ল্যাটের গ্যাসলাইন বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ হয়ে তিনি ও তাঁর দুই সন্তান মারা যায়। হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী ও আরেক সন্তান। ফ্ল্যাটে ওঠার পর তিনি বাড়িওয়ালাকে গ্যাসজাতীয় গন্ধ পাওয়া এবং গ্যাসলাইন লিক হওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাড়িওয়ালা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি। অথচ বাড়িওয়ালা যদি গাফিলতি না করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতেন, তাহলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটত না।
গ্যাসের লাইনে ত্রুটি ও এ কারণে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমরা নিয়মিতই লক্ষ করে আসছি। ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ সংযোগের কারণেও ঘটছে অগ্নিকাণ্ড। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। কাউকে এর জন্য দায় নিতে হয় না। কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এখন সময় হয়েছে এসবের দিকে নজর দেওয়ার।
কোনো ফ্ল্যাট বা বাড়িভাড়া নেওয়ার সময় ভাড়াটেকে যেমন বাড়ির সবকিছু ঠিক আছে কি না, তা দেখে নেওয়ার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। তেমনি বাড়িওয়ালাকেও তাঁর বাড়ির নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই বাড়িভাড়া দিতে হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দুই ক্ষেত্রেই গাফিলতি রয়েছে। এ ধরনের গ্যাস দুর্ঘটনার ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। কীভাবে এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বাসা বা ফ্ল্যাটকে নিরাপদ রাখা যাবে, সে ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা কোনো না কোনো পর্যায়ে গাফিলতির জন্যই এসব দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি খুবই জরুরি। এটা নিশ্চিত করা না গেলে এ ধরনের দুর্ঘটনা বাড়বে বৈ কমবে না।