সাশ্রয়ী দামে জ্বালানির জন্য নিজস্ব সম্পদ আহরণ ও গভীর সমুদ্র বন্দর দরকার

সাশ্রয়ী দামে জ্বালানি সরবরাহ করতে নিজস্ব সম্পদ অনুসন্ধান, আহরণ ও ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন। একই সাথে দরকার গভীর সমুদ্র বন্দর। এতে একসঙ্গে বেশি জ্বালানি আমদানি সম্ভব।
স্থানীয় উদ্যোক্তারা এই দুই খাতেই বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
‘রোল অফ প্রাইভেট সেক্টর এনটিটিস ইন দ্য এনার্জি সেক্টর অফ বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগের টেকনিক্যাল উইং হাইড্রোকার্বন ইউনিট এই সেমিনারের আয়োজন করে।
জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান সেমিনারের সূচনা বক্তব্যে বলেন, জ্বালানি খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন নীতি, আইন প্রনয়ণ করেছে। দেশের উন্নয়ন যাত্রায় বেসরকারি খাতকে সরকার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মনে করে।
হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক এসএম মঞ্জুরুল কাদেরের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইস্টকোষ্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা চলছে তার ফলে ভবিষ্যতে জ্বালানির চাহিদা আরও বাড়বে। আমদানি করা জ্বালানি পণ্যের দাম ওঠা-নামার ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বড় জাহাজে করে একসঙ্গে বেশি পরিমাণ জ্বালানি পণ্য আনা গেলে দাম অনেক কম পড়ে। তেমন জাহাজ আনার জন্য দরকার গভীর সমুদ্রবন্দর। সরকারি অনুমোদন পেলে বেসরকারি উদ্যোক্তারা এ ধরণের বন্দর নির্মাণে বিনিয়োগ করতে পারে।
বলা হয়, বন্দর সুবিধা না থাকায় বর্তমানে এলপি গ্যাস আমদানি করা হয় আড়াই থেকে চার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার জাহাজে করে। আর গভীর সমুদ্র বন্দর থাকলে একসঙ্গে ৪৪ হাজার মেট্রিক টনের জাহাজ আনা যায়। এতে পণ্যের দাম অনেক কম পড়ে। শুধু এলপি গ্যাস নয়, জ্বালানি তেল, কয়লা, এলএনজিসহ সব জ্বালানি পণ্য আমদানিতে গভীর সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে পারলে সুবিধা পাওয়া যাবে।
দেশের সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণে রাষ্ট্রীয় ও বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহী বেসরকারি উদ্যোক্তারা । এ ব্যাপারে সরকারের নীতিসহায়তা দরকার।
প্রবন্ধে পেট্রোলিয়াম আইন ১৯৭৪ সংশোধন; একটি পেট্রোকেমিক্যাল টার্মিনাল স্থাপন; বেসরকারি খাতে পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি ও বিতরণের অনুমতি দেয়াসহ কয়েকটি প্রস্তাব দেয়া হয়।
জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবুল মনসুর বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ জরুরি। সরকার বেসরকারি খাতকে নীতিসহায়তা দেবে।
বেসরকারি খাতকে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে হবে।
সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন সামিট গ্রুপের অন্যতম পরিচালক ফয়সল খান এবং এফইআরবির চেয়ারম্যান ও এনার্জি বাংলার উপদেষ্টা সম্পাদক অরুণ কর্মকার। এ ছাড়া ইস্টকোষ্ট গ্রুপের অন্যতম পরিচালক তানজীম চৌধুরী ও এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল হোসেন, বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের জাকারিয়া জালাল, এক্সিলারেট এনার্জির কান্ট্রি ম্যানেজার কমোডর (অব.) হাবিব বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে জ্বালানি খাতের সরকারি বেসরকারি কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।