সিএনজি স্টেশন মালিকদের ধর্মঘট স্থগিত

সরকারের আশ্বাস পেয়ে পূর্বঘোষিত ধর্মঘট আগামী ২৪ আগষ্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন সিএনজি স্টেশন মালিকরা। শনিবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং অ্যান্ড কনভারশন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন দেখা করে এ বিষয়ে আলোচনা করে। শনিবার দুপুর একটার দিকে মন্ত্রীর বারিধারায় বাসায় এসোসিয়েশনের ১০ সদস্যের একটি দল দেখা করতে যান।
বৈঠকশেষে সিএনজি এসোসিয়েশনের সভাপতি জাকির হোসেন নয়ন বলেন, বৈঠকে দাবি পূরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি ১৪ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। তাই আমরা আরো ১০ দিন সময় বাড়িয়ে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত করেছি।
প্রসঙ্গত, কমিশন বাড়াানোসহ সাত দফা দাবিতে আগামীকাল ৮ জুন রোববার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় সিএনজি এসোসিয়েশন। গত ২৪ মে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই কর্মসূচির কথা জানায়।
সিএনজি মালিকদের দাবির বিষয়ে পেট্রোবাংলা জানায়, প্রতি ঘনমিটার সিএনজি ভোক্তা পর্যায়ে ৩০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এরমধ্যে ফিডগ্যাসের মূল্য ২৩ টাকা এবং সাত টাকা সিএনজি মালিকদের মার্জিন হিসেবে দেয়া হয়। ফিড গ্যাসের ২৩ টাকার মধ্যে ১২ দশমিক ৬৫ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয় অবশিষ্ট ১০ দশমিক ৩৫ টাকা বিভিন্ন কোম্পানির জন্য নির্ধারিত হিস্যা হিসেবে বন্টন করা হয়। সিএনজি ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত বছর ডিসেম্বরে জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের এক কমিটি মার্জিন বৃদ্ধিতে যৌক্তিক উল্লেখ করে দেয়া প্রতিবেদনে বলছে, মার্জিন বৃদ্ধি করতে হলে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধি করতে হবে অথবা সরকারি অংশ থেকে মালিকপক্ষকে অর্থ দিতে হবে। এ অবস্থায় জ্বালানি বিভাগ বিষয়টি সমাধানের জন্য পেট্রোবাংলাকে চিঠি দেয়। এরপর পেট্রোবাংলা গত ২৭ মে সুনির্দিষ্ট কোন প্রক্রিয়ায় মার্জিন বৃদ্ধি করাতে হবে তা জানতে চেয়ে জ্বালানি বিভাগে চিঠি দেয়। ওই চিঠি পাওয়ার পর গত বুধবার জ্বালানি বিভাগের উপসচিব ফারজানা মমতাজ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয় গত ৩১ ডিসেম্বর জ্বালানি বিভাগ যে চিঠি দিয়েছিল তার আলোকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর জ্বালানি বিভাগের সুপারিশের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কশিনের (বিইআরসি) কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। এর ঠিক আধা ঘন্টার মধ্যে বিইআরসি ফিরতি চিঠিতে জানায়, সিএনজি অপারেটরদের মার্জিন বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও পত্রে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন প্রস্তাব নেই। সেহেতু এ বিষয়ে কমিশনের করনীয় কি তা সুস্পষ্ট নয়। কমিশনের সচিব হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরো বলা হয় দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত কোন আইন থাকলে কমিশন আইন ২০০৩ এবং প্রাকৃতিক গ্যাস বিতরণ ট্যারিফ প্রবিধানমালা-২০১০ অনুযায়ি প্রয়োজনীয় যৌক্তিকতা বিশ্লেষন সহ সুনির্দিষ্টভাবে করতে হবে।
সিএনজি এসোসিয়েশনের অন্য দাবিগুলো হলো-ফিড গ্যাসের বর্ধিত মূল্য নিরাপত্তা চেক জামানত রাখা, স্টেশন থেকে গ্যাস রেশনিং প্রথা প্রত্যাহার করা, প্রতিশ্রুত ৫৮টি স্টেশনে গ্যাস সংযোগ দেয়া, সিএনজি স্টেশনে ইটিসি মিটার স্থাপন করা এবং সিএনজি খাত সংক্রান্ত সরকারি সব সিদ্ধান্তের সময় তাদের মতামত নেয়। দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৫ আগস্ট থেকে তাদের ধর্মঘট শুরু হবে বলে জানান সংগঠনের সভাপতি।