সুন্দরবন রক্ষার যুদ্ধ বাংলাদেশের জীবন-মরণ যুদ্ধ
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চুক্তি বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে সকাল থেকেই শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রতিবাদী গান, নাটক পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। রামপাল চুক্তি ছুড়ে ফেলো, সুন্দরবন রক্ষা করো’—এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে অবস্থান কর্মসুচি পালন করা হয়।
জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, রামপাল একটি জনবিচ্ছিন্ন প্রকল্প। এটা দেশ ও জনগণের স্বার্থে নয়। এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে সারাদেশে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে সরকার প্রকল্পের বিরোধীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা করছে। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী প্রকল্প।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামিরিটাস শিক্ষক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, সুন্দরবন রক্ষার যুদ্ধ বাংলাদেশের জীবন-মরণ যুদ্ধ। এ যুদ্ধে কোনোভাবেই পরাজিত হওয়া যাবে না। এখানে হেরে গেলে ভবিষ্যতে সব জায়গায় হেরে যাব। সুন্দরবন রক্ষায় একাত্তরের মতো বিজয়ী হতে হবে। পিছপা হওয়া যাবে না।
কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, রামপালে এই কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। যে আন্দোলনের জাগরণ দেশব্যাপী সূচনা করেছি, সেটা স্তব্ধ হবে না। সেই আগুনে রাজনীতির পরিণতি কী হবে সেটা সরকারকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, রাজনীতিতে পরিবর্তন এনে হলেও সুন্দরবনকে রক্ষা করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ভূইয়া বলেন, একদিকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবেন, অন্যদিকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করবেন- এটা বন্ধ করেন। অতীতের আন্দোলনের কথা স্মরণ করে এই প্রকল্প থেকে সরে আসেন। তা না হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, এরপর বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক অবস্থার গতি পরিবর্তনও ঘটে যেতে পারে। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাইফুল ইসলাম, মোশরেফা মিশু, জোনায়েদ সাকি।
বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্য়ন্ত এই কর্মসূচি চলে। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটি, গণসংহতি আন্দোলন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, সুজন, নাগরিক ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন।