সুন্দরবনের নদী ফুলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত, বন্যপ্রাণী নিয়ে শঙ্কা
বিডিনিউজ:
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে অতি জোয়ারে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে; এতে বনের প্রাণির প্রাণহানির আশঙ্কা করছে বনবিভাগ।
রোববার উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের প্রধান প্রধান নদ-নদী বিপৎসীমার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুণী জানান।
তিনি বলেন, নদ-নদীর পানি দুই থেকে পাঁচ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে বনের মিষ্টি পানির আধার শতাধিক পুকুর তলিয়ে গেছে। ফলে প্রাণীকূল ও বনকর্মীদের বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট তৈরি হতে পারে।
সুন্দরবনের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বিকালে বলেন, রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে পানির অস্বাভাবিক চাপ রয়েছে। রোববার দুপুরের জোয়ারের পানি সুন্দরবনের সব নদ-নদীতে প্রবাহিত হয়। সেই পানির উচ্চতা ছিল পাঁচ থেকে আট ফুট পর্যন্ত।
“সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। বনের হরিণ, বানর, রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন প্রজাতির আবাসস্থল তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণিকূলের প্রাণহানির শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।”
মিহির কুমার বলেন, “বনের মিষ্টি পানির একমাত্র আধার শতাধিক পুকুর তলিয়ে গেছে। বনকর্মী ও প্রাণিকূল ওই পুকুরের পানি পান করে থাকে। এতে করে মিষ্টি পানির একটা সংকট তৈরি হবে। দুর্যোগ চলে যাওয়ার পর প্রাণিকূলসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।”
রাতের জোয়ারের পানির চাপ আরও বাড়লে কী হবে তা নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় এই বন কর্মকর্তা।
এদিকে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি শনিবার রাত ৯টায় অনলাইনে জরুরি সভা করে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রোববার সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে পাঁচ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের বাগেরহাটে প্রস্তুত করা ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু হয়। এর মধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবার রাখা শুরু হয়েছে।
মোংলা বন্দরে ঝড়ের আশঙ্কায় শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই পণ্য ওঠা-নামাসহ সব ধরনের কাজ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
দুর্যোগের মধ্যে বাগেরহাটের মোংলায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নদী পারাপারের সময় একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। ট্রলারটিতে প্রায় ৬০ জন যাত্রী মোংলা নদী পার হচ্ছিল। তবে সবাই সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। ফলে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।