হাওরে ৩২ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার হাওরে ৩২ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এ কেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৭ সেন্ট বা ১৩ টাকা ৬০ পয়সা। কোরিয়ান কোম্পানি এডিসান সলিটেক, পাওয়ার পয়েন্ট এবং বাংলাদেশের হাওর বাংলা-কোরিয়া গ্রিন এনার্জি যৌথভাবে এই কেন্দ্র স্থাপন করবে।
সোমবার বিদ্যুৎ ভবনের মুক্তি হলে এই তিন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে এখান থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যোগ হবে। এজন্য ৩৫ কিলোমিটার ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হবে। আর তাই বিদ্যুতের দাম কিছুটা বেশি বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ঠরা। পিডিবি ২০ বছর এই বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করেছে। সংশ্লিষ্ঠ কোম্পানি নিজস্ব অর্থে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করবে। আবার নিজেরাই পরিচালনা করবে। অর্থাৎ বিওও পদ্ধতিতে এতে বিনিয়োগ হবে। কোরিয়ান কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করবে।
চুক্তিতে সই করেন কনসোর্টিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কি ইয়াং লি এবং পিডিবির পক্ষে কোম্পানি সচিব মাজহারুল হক। এ সময় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম, পিডিবির চেয়ারম্যান শামসুল হক মিয়া, হাওর বাংলা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, এডিসান সলিটেক কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান আং, পাওয়ার পয়েন্ট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান লি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে নসরুল হামিদ বলেন, প্রথমবারের মতো হাওর অঞ্চলে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র হাওর অঞ্চলের জীবনযাত্রা পালটে দেবে। শুধু বিদ্যুৎ নয় অবকাঠামোগত উন্নয়নে এই বিদ্যুৎ সহায়ক হবে। ভালভাবে বাঁচতে হলে বিদ্যুৎ না হলে নয়। তিনি বলেন, অল্প অল্প করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ লাখ ঘরে সৌর বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে, খুব শিগগির হাতিয়ায় দেয়া হবে। ভবিষ্যতে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ দিতে চায় সরকার। সেই লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
বিদ্যুৎ সচিব বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কারণে হাওর অঞ্চলে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে। যে কোনো ধরনের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ জরুরী। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় জ্বালানিতে বৈচিত্র আনা হচ্ছে। বাংলাদেশের আবহাওয়ার কারণে সূর্যের আলো আছে প্রচুর। তাই সে আলো দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সহজ। তিনি বলেন, বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা আনুযায়ি ২০২১ সালের মধ্যে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে করা হবে। পরিবেশবান্ধব এই বিদ্যুৎ নির্ধারিত সময়ে নয়, যত দ্রুত সম্ভব উৎপাদনে আনার তাগিদ দেন তিনি।
পিডিবির চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত পিডিবি ৭৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে চুক্তি করেছে।