১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৬ বার
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, গত ১০ বছরে ৬ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আবাসিক, বিদ্যুৎ ও সার খাতে চারবার, শিল্প, ক্যাপটিভ পাওয়ার, চা ও বাণিজ্যিক খাতে পাঁচবার এবং সিএনজি খাতে ছয়বার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। শেষবার ২০১৯ সালে সব শ্রেণির গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের চাহিদার অতিরিক্ত তরল গ্যাস (এলপিজি) বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানী করা হলে দেশ আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সরকারি বেসরকারি খাত মিলিয়ে দেশে এলপিজি উৎপাদনের পরিমান প্রায় ৭.২ লাখ মেট্রিক টন। ২০০৯ সালে যা ছিল প্রায় ৬৫ হাজার মেট্রিক টন।
তিনি জানান, বর্তমানে ২৪টি প্রতিষ্ঠান দেশে এলপিজি আমদানি, বোতলজাত ও বাজারজাত করছে এবং আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান শিগগিরই উপাদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান অবকাঠামো (জেটি, এলপিজি মজুদ ও বোতলজাতকরণ ক্ষমতা) বিবেচনায় এলপিজি উৎপাদনের সক্ষমতা বর্তমানে দেশের চাহিদা/উৎপাদন এলপিজি’র পরিমানের চেয়ে অনেক বেশি। এই বর্ধিত উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করে এলপিজি উৎপাদন ও দেশের চাহিদার অতিরিক্ত এলপিজি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রপ্তানী করা হলে দেশ আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এ ছাড়া আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন ও এআইটি হিসেবে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবহনসহ এলপিজি ব্যবসায় বিপুল জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে শতভাগ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হবে। দক্ষিণ কোরিয়া তাদের দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সময় নিয়েছে ৫০ বছর। আমাদের অতটা সময় লাগবে না। ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারব।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইডকলের অর্থায়ন ও টিআর/কাবিটা প্রকল্পের অধীনে বর্তমানে সৌর বিদ্যুতের গ্রাহক ৬০ লাখ ৩৮ হাজার ৩০৩টি। এর মধ্যে ইডকলের নিজস্ব অর্থায়নে ৪১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৯১, টিআর/কাবিটা প্রকল্পের অধীনে ইডকলের স্থাপিত গ্রাহক ১১ লাখ ২৭ হাজার ১৫৮ এবং অন্যান্য সংস্থার স্থাপিত ৭ লাখ ৪৫ হাজার ১৫৪।
সংসদে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ৫১০ কিলোওয়াট। যেখানে বিদ্যুতের লাইন নেই সেসব এলাকায় ৫০ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯টি সৌর সংযোগ আছে।
আবাসিক ব্যবহারের জন্য গ্যাস সংযোগ দেয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের আপাতত নেই বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার ও বিকল্প জ্বালানি সহজলভ্য হওয়ায় আবাসিকে গ্যাস সংযোগ স্থগিত আছে। বর্তমানে বাসাবাড়িতে পাইপলাইন গ্যাসের পরিবর্তে এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
বর্তমানে দেশে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট। গ্রিডভিত্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৯ হাজার ৪২৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে সরকারি খাতে ৯ হাজার ৭৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৪টি ও বেসরকারি খাতে ৮ হাজার ৫২৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে।