২০ বছর পর পরিবর্তন হল কাফকো চুক্তি
২০ বছর পর পরিবর্তন হল কাফকো চুক্তি। গ্যাসের দাম বিছুটা বাড়লো। শর্ত হল শিথিল। কমল চুক্তির মেয়াদ। প্রায় ছয় মাস পর কাফকোতে গ্যাস সরবরাহ করা শুরু হয়েছে।
কর্ণফুলি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির সাথে কর্ণফুলি ফারটিলাইজার কোম্পানির (কাফকো) গ্যাস সরবরাহ চুক্তি করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর উভয়ের মধ্যে চুক্তি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ৩১ জুলাই। ২০ বছর আগে এই চুক্তি করা হয়েছিল।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে কাফকোর সাথে নতুন করে চুক্তি করা হয়েছে। এখন থেকে কাফকোর কাছে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাস চার ডলার ৫৫ সেন্টে বিক্রি করা হবে। যা আগে ছিল তিন ডলার তিন সেন্ট। প্রতি হাজার ঘনফুটে এক ডলার ২৫ সেন্ট করে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে চুক্তি করা হয়েছে।
আগে চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০ বছর। এখন করা হয়েছে পাঁচ বছর। তবে দুই বছর পরে পর্যালোচনা করা যাবে। অর্থাৎ প্রয়োজন হলে দাম বাড়ানো যাবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাফকোকে গ্যাস সরবরাহের বাধ্যবাধকতাও এখন আর থাকছে না। এছাড়া সরকার চাইলেই এই চুক্তি বাতিল করতে পারবে।
হয়ে যায়। ২০ বছর আগে সরকারের সাথে এই চুক্তি করা হয়েছিল।
জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক জানান, দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে চুক্তি করা হয়েছে। এখন কাফকোর কাছে গ্যাস বিক্রি করে লাভ হবে। তাছাড়া কাফকো যে যন্ত্র দিয়ে সার উৎপাদন করে তা বাংলাদেশের পুরানো কয়েকটি সার কারখানার চেয়ে ভাল। এর দক্ষতা বেশি। এজন্য সেখানে তুলনামূলক কম গ্যাসে বেশি সার উৎপাদন হবে। তিনি বলেন, কাফকোর সঙ্গে ২০ বছর আগে যে চুক্তি হয়েছিল সে তুলনায় এখন অনেক ভাল চুক্তি করা হয়েছে। গ্যাসের দাম বাড়িয়ে চুক্তি করার কারণে সরকারের লোকসান হবে না বরং আয় বাড়বে। বাংলাদেশ একদিকে আগের চেয়ে বেশি দামে গ্যাস পাবে অন্যদিকে বাংলাদেশের শেয়ার বেশি থাকার কারণে লভ্যাংশও পাবে বেশি।
বাংলাদেশ, জাপান, ডেনমার্ক, লেডারল্যান্ড, উন্নত দেশের বিনিয়োগ তহবিল (আইএফইউ) ও সাবকন্টিনেন্টাল এমোনিয়া ইনভেসমেন্ট কোম্পানি যৌথভাবে কাফকোর মালিক বা অংশীদার। বর্তমানে এর ৪৩ ভাগের মালিকানা বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রনালয়ের। এছাড়া জাপানের ৩০ ভাগ, ডেনমার্কের ২০ ভাগ এবং বাকিদের সাত ভাগ অংশ আছে। ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীর পাশে এই সার কারখানাটি স্থাপন করা হয়। এরআগে ২০০৪-০৫ অর্থবছরে গ্যাস সরবরাহ চুক্তি (জিএসএ) নবায়ন করা হয়।
কাফকোতে যে সার উৎপাদন করা হয় তা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দামে কিনে নেয়। কাফকোতে ইউরিয়া সার আর এমোনিয়া উৎপাদন করা হয়। বছরে প্রায় সাত লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার এবং দেড় লাখ মেট্রিক টন এমোনিয়া উৎপাদন করা হয়।
সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করতে গিয়ে সার কারখানাগুলো বন্ধ রাখা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এপ্রিল-মে মাস থেকেই কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে অন্য কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ শুরু হলেও কাফকোকে আর গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। নতুন করে চুক্তি করার পর ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। পর্যায়ক্রমে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। প্রথম দিন দেয়া হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস। বোরবার কাফকোতে চার কোটি ৫৫ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। সব মিলে কাফকোতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ছয় কোটি ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হয়।