জ্বালানি, অর্থায়ন, বিনিয়োগ পরিবেশ সুশাসন বিদ্যুৎখাতের অন্তরায়
প্রাথমিক জ্বালানি, অর্থায়ন, বিনিয়োগ পরিবেশ এবং সুশাসন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের প্রধান অন্তরায়। মূল্য সমন্বয় এবং দক্ষ জনবল তৈরী করে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কর্মরত কর্মকর্তারা এই মন্তব্য করেছেন। দুদিনের ‘সেক্টর লিডার্স ওয়াকশপ’ শেষে শনিবার বিদ্যুৎ ভবনে সমাপনী অনুষ্ঠানে এই কথা বলা হয়।
অনুষ্ঠানে কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্যুৎখাতে বেসরকারি অংশীদারিত্ব ৫০ ভাগের বেশি করা ঠিক হবে না। তবে বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সরকারের কাজ ব্যবসায় করা নয়। শুধু নীতি করে তা তদারকি করবে। বেসরকারিখাতকে সহায়তা করবে সরকার।
সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ান ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ আর খান, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম খান, ¯্রডোর চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায় ও অতিরিক্ত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে অর্থায়ন নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ২০৩০ সালে বিদ্যুতে ৪২ বিলিয়ন এবং জ্বালানিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। আর এই বিনিয়োগের জন্য বড় অন্তরায় অর্থ নিয়ে আসা। দেশি ও বিদেশী বিভিন্ন উৎস থেকে এই বিনিয়োগ আনা সম্ভব। তবে তার জন্য যথাযথ বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরী করতে হবে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থানে প্রাথমিক জ্বালানির সাথে সাথে জমি জমি অধিগ্রহন, বিদ্যুৎ জ্বালানি বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, জনবল অন্তরায়। এসব অন্তরায় থেকে বের হয়ে আসতে মূল্য সমন্বয়, দেশীয় কয়লার ব্যবহার দ্রুত বাড়ানো, এলএনজি আমদানি, পাশ্ববর্তী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি, বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি হিসেবে তেলের ব্যবহার কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি খাত উন্নয়নের জন্য সবার আগে প্রয়োজন সুশাসন। মাথাভারি প্রশাসন নিয়ে চলা মুশকিল। আগামীতে বিদ্যুতের উৎপাদন দ্বিগুণ বাড়াতে হবে। সেজন্য সুশাসন অবশ্যই প্রয়োজন। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ করতে হবে। এজন্য নেতৃত্বের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উপর নির্ভর করছে জিডিপি দুই শতাংশ বাড়া। এই খাতকে যত দ্রুত উন্নত করতে পারব তত তাড়াতাড়ি মধ্য আয়ের দেশ হবে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে জনপ্রতি ৬০০ কিলোওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে তা অর্ধেক রয়েছে। সরকারি সংস্থাগুলোকে নীতি প্রণয়ন ও রেগুলেটরি কাজের মধ্যে থাকতে হবে। তিনি বলেন, আগামী বছরগুলোতে ভর্তূকি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্য বিকল্প অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে পুঁজি বাজার থেকে অর্থ নিয়ে দেশের সকল মানুষকে এই খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, বাজারে নিন্ম মানের সৌর প্যানেলে ছেয়ে গেছে। এগুলো তদারকি করতে হবে। প্রতিমন্ত্রী কয়লা উত্তোলন দ্বিগুণ করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে প্রতিদিন ৪/৫ হাজার টন কয়লা উত্তোলন করা হয়। এভাবে উত্তোলন করতে ২০০ বছর সময় লাগবে। প্রতিদিন ৪০ হাজার টন কয়লা তোলা উচিত। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ আর খান বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে আরও সমন্বয় করতে হবে।