জ্বালানি বাণিজ্যে বদল আনবেন বাইডেন?

মার্কিন প্রশাসনে পালাবদল জ্বালানি নীতিতেও বড় পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যে প্যারিস চুক্তিতে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নবনির্বাচিত জো বাইডেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালে ক্ষমতায় এসে জ্বালানি বাণিজ্যে পরিবর্তন আনেন। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে তার নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বেশ আলোচিত হয়। তিনি একজেটিয়া বাণিজ্যের পথে হাঁটেন। পরিবেশবাদীরা তার বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যের বিরোধীতা করেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ের অনেক নীতি থেকে সরে এসেছিলেন। তেমনি জো বাইডেন আবার আগের নীতিতে ফিরবেন বলে মনে করছেন অনেকে। জ্বালানির সাথে পরিবর্তন আসতে পারে পরিবেশ নীতিতেও।
নির্বাচনি প্রচারে পরিবেশ বান্ধব নীতির নানা কথা বলে পরিবেশবাদীদের সুনজরে আসেন জো বাইডেন।
বারাক ওবামা জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে প্যারিস চুক্তিতে সই করে যুক্তরাষ্ট্র। জো বাইডেন তখন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। তখন কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা, পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো, পরিবহন ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগৗ জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোসহ নানা নীতি নেয়া হয়েছিল। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বের হয়ে আসেন, প্রত্যাহর করে নেন । এগুলো কার্যকর কোন উদ্যোগ নয় বলে তিনি তখন অভিমত দেন।
জো বাইডেন নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেই প্যারিস চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি। বলেছেন, দায়িত্ব নেয়ার পর তার প্রথম কাজ হবে প্যারিস চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়া। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এগিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই।
নির্বাচনি বিতর্কে অবশ্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বেশি করার কথা বলে বিপাকে পড়েছিলেন জো বাইডেন। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে পর্যায়ক্রমে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে সৌরশক্তি ও বাতাসের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দেয়া হবে। তেল গ্যাসের ব্যবহার কমানো হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি কার্বনমুক্ত হবে এটি তাঁর পরিকল্পনার অংশ। অনেক আগে থেকেই তিনি তেল গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে আনার প্রস্তাব করে আসছেন।
তবে একেবারে যে তা বন্ধ হবে না তাও তিনি আবার পরিস্কার করেন। বলেন, তেণ গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ হবে না। তেল গ্যাস আহরণে পরিবেশের ক্ষতি করে এমন পদ্ধতি পরিবর্তন করা হবে। তাও সব এলাকায় নয়।
২০শে জানুয়ারি মার্কিন ক্ষমতায় বসবেন জো বাইডেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকেই তার ক্ষমতায় বসার অপেক্ষায় পরিবেশ নিয়ে আন্দোলনকারীরা।
উন্নতদেশগুলো বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে। আর এতে পরিবেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। এখান থেকে পর্যায়ক্রমে বের হয়ে আসতে সম্মত হয়ে প্যারিস চুক্তিতে সই করে উন্নত প্রায় সব দেশ।
জীবাশ্ম জ্বালানি বা তেল গ্যাস ব্যবহারের অন্যতম দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তাই প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে আসলে তা বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। এখন সেই সংশয় থেকে আবার বের হয়ে আসার স্বপ্ন দেখছে বিশ্ব। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রকে আগের নীতিতে ফিরিয়ে নেবে এমনই আশা পরিবেশবাদীদের।