বিবিয়ানা থেকে বাড়তি গ্যাস উত্তোলন শুরু
বিবিয়ানা বর্ধিত গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার প্রায় চার কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই উত্তোলন ৩০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত বাড়ানো হবে। গ্যাস উত্তোলনের খবর নিশ্চিত করেছে শেভরণ বাংলাদেশ।
পেট্রোবাংলা সুত্র জানায়, আগে বিবিয়ানায় কূপ ছিল ১২টি। সেখান থেকে ৮৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো। গতকাল ১৭টি কূপ থেকে ৮৯ কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই গ্যাস যোগ হওয়ার পরে শুধু শেভরনের উত্তোলনের পরিমান হবে ১৪০ কোটি ঘনফুট। যা বাংলাদেশের মোট গ্যাস উত্তোলনের প্রায় ৪০ ভাগ। এছাড়াও এখান থেকে প্রতিদিন বাড়তি প্রায় পাঁচ হাজার ব্যারেল তরল গ্যাস (কনডেনসেট) উঠবে। বর্তমানে প্রায় চার হাজার ব্যারেল কনডেনসেট তোলা হয়। মোট নয় হাজার ব্যারেল কনডেনসেট তোলা হবে। সিলেটের বিবিয়ানায় অবস্থিত বিবিয়ানা ক্ষেত্র থেকে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি গ্যাস তোলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শেভরন কর্পোরেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জে জনসন বলেন, বিবিয়ানা ক্ষেত্রর এই গ্যাস এশিয়ার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। বিবিয়ানার সম্প্রসারণ এশিয়ায় জ্বালানী চাহিদা পুরণে শেভরনের যে প্রতিশ্রুতি ছিল তা প্রতিফলিত হয়েছে।
শেভরন এশিয়া প্যাসিফিক অনুসন্ধান ও উৎপাদন এর প্রেসিডেন্ট মেলডি মায়ার বলেন, বাংলাদেশে অন্যতম সর্বোচ্চ বিদেশী বিনিয়োগককারী হিসেবে শেভরণ বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার। বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক সহযোগিতায় শেভরণ ভূমিকা রাখছে। এই গ্যাস উত্তোলনের মধ্যমে শেভরণ আবারও প্রমাণ করল তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শেভরণ বাংলাদেশ সহৃত্র জানায়, বিবিয়ানার বর্ধিত অংশে নতুন করে ১২টি কূপ খনন করা হয়েছিল। সেখান থেকেই এই বাড়তি ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উঠবে। কূপ খননের পাশাপাশি গ্যাস প্রত্রিক্রয়া কেন্দ্রর ক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে। কূপ খনন ও গ্যাস প্রত্রিক্রয়া করণ ক্ষেত্রসহ অন্যান্য বিষয়ে ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে শেভরন। বিবিয়ানার গ্যাসক্ষেত্রে ১২ টি কূপ আগে ছিল। এ ক্ষেত্রের উত্তরদিকে ছিল সাতটি কূপ, এর পাশে আরও চারটি, দক্ষিণ দিকে পাঁচটি ছিল সেখানে আরও দুটি এবং বাকী ৬টি কূপ খনন করা হয় ক্ষেত্রের পশ্চিমাংশে।
পেট্রোবাংলার কর্তৃপক্ষ জানায়, বিবিয়ানা সম্প্রসারণ ক্ষেত্র থেকে গ্যাস তোলা শুরু হয়েছে। এরফলে গ্যাসের যে ঘাটতি আছে তা কিছুটা কমে আসবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনেও বাড়তি গ্যাস দেয়া সম্ভব হবে।
বিবিয়ানায় উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ পাঁচ দশমিক ৭৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। এরমধ্যে দেড় টিসিএফের মতো গ্যাস তোলা হয়েছে।
শেভরণ জালালাবাদ, বিবিয়ানা ও মৌলভীবাজার ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোল করে। জালালাবাদ থেকে প্রতিদিন ২৫ কোটি এবং মৌলভীবাজার থেকে প্রায় সাত কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলা হয়। মঙ্গলবার ২০টি গ্যাস ক্ষেত্র থেকে মোট ২৪০ কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলা হয়েছে। এরমধ্যে শেভরণ থেকেই তোলা হয়েছে ১৫০ কোটি ঘনফুট।