নাইকো মামলা: লন্ডনে শুনানী
নাইকোর সাথে ঝুলে থাকা মামলা মিমাংসা হতে যাচ্ছে। প্রায় দশ বছর পর মামলার চূড়ান্ত পর্যায় এসেছে। মঙ্গলবার থেকে লন্ডনে টানা তিন দিন এর শুনানী হবে। আন্তর্জাতিক সালিশ আদালত ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভে¯দ্বমেন্ট ডিসপুটেড (ইকসিড) শুনানীর এই দিন ধার্য করেছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, সোমবার বাংলাদেশ আদালতে নাম রেজিস্ট্রি করবে। মঙ্গলবার থেকে বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত টানা শুনানী হবে। এই মামলায় একাধিক পরে অংশ থাকায় অধিকতর বিশ্লেষণ করছে আদালত। একই সাথে এবিষেয় বাংলাদেশের হাইকোর্টেরও একটি রায় আছে। সেই রায়টিও পর্যালোচনায় নিয়ে নতুন রায় দিতে যাচ্ছে ইকসিড।
মামলায় জয়ী হলে নাইকোকে টেংরাটিলা বিষ্ফোরণের আর্থিক ও পরিবেশগত যে তি হয়েছে তা শোধ করতে হবে।
লন্ডনের সালিশ আদালতে এই শুনানী হবে। শুনানীতে অংশ নিতে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমদ, বাংলাদেশের আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা লন্ডন পৌছেছেন।
এরআগে ইকসিড কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকো বাংলাদেশের কোন সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবে না বলে একটি রায় দেয়। সরাসরি বা পরো কোনভাবেই তাদের কোন স্বার্থ সংশ্লিষ্ঠ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবে না। হস্তান্তর করতে হলে সরকার ও পেট্রোবাংলা উভয়েরই অনুমোদন নিতে হবে। নাইকোকে সে অনুমোতি দেয়া হয়নি।
ফেনী গ্যাসেেত্রর পাওনা টাকা আদায়ে নাইকোর করা মামলার রায় দিতে এরআগে সময় বাড়িয়েছিল ইকসিড । ১৫ নভেম্বর এই মামলার রায় দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় রায় না দিয়ে আদালত বাড়তি সময় নেয়। বেশি পর্যবেণের জন্য সে সময় বাড়তি সময় নেয়া হয়েছিল। আর সেজন্যই আবার শুনানী করা হচ্ছে।
২০১০ সালের মে মাসে নাইকো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইকসিড-এ দুটি মামলা করে। একটি টেংরাটিলার বিষ্ফোরণের ক্ষতিপূরণ অন্যটি ফেনী ক্ষেত্রের গ্যাসের টাকা আটকে না রেখে তা পাওয়ার জন্য। ২০১৩ সালের ১৯ আগ®দ্ব দুই মামলার মধ্যে টেংরাটিলার বিষয়ে স্থানীয় আদালতের রায়ই চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়ে দেয় ইকসিড। ফেনী গ্যাসেেত্রর বিষয়টি নিয়ে দুই পরে মধ্যে সমঝোতা করার পরামর্শ দেয় ইকসিড। কিন্তু উভয়ের মধ্যে কোন সমঝোতা হয়নি।
১৯৫৯ সালে আবিষ্কৃত হয় টেংরাটিলা গ্যাসত্রে। এত্রে উন্নয়নে ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর বাপেক্সের সঙ্গে যৌথ চুক্তি করে নাইকো। ক্ষেত্রে কূপ খননকালে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি প্রথম দফা ও একই বছরের ২৪ জুন দ্বিতীয় দফা বিষ্ফোরণ ঘটে। তাদের গাফিলতির কারণে সে সময় বিষ্ফোরণ হয়েছিল বলে একাধিক কমিটি সে সময় জানায়। চুক্তি অনুযায়ি পিপুরণ দিতে বাধ্য নাইকো। কিন্তু তারা তা দিতে সম্মত হয়নি। আর এজন্যই নাইকোর কাছে ক্ষতিপূরণ মামলা করে বাংলাদেশ। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় আদালতে ৭৪৬ কোটি টাকা বা ৩৫ দশমিক ৫৩৩ মিলিয়ন ডলার তিপুরণ চেয়ে নাইকোর বিরুদ্ধে মামলা করে সরকার। আদালত ক্ষতিপুরণ আদায় না হওয়া পর্যন্ত নাইকোর কাছ থেকে প্রাপ্ত গ্যাসের দাম না দেয়ার জন্য পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেয় ও নাইকোর সব ধরনের ব্যাংক একাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।
এ মামলার আগে ক্ষতিপূরণের সঙ্গে সমন্বয় করতে নাইকোর অধীন ফেনী গ্যাসত্রে থেকে প্রাপ্ত গ্যাসের দাম দেয়া বন্ধ করে দেয় পেট্রোবাংলা। ওই ক্ষেত্রের গ্যাসের দাম বাবদ নাইকো পেট্রোবাংলার কাছে প্রায় তিন কোটি ৪০ লাখ ডলার পাওনা রয়েছে। পরবর্তীকালে নাইকোর ব্যাংক একাউন্ট খুলে দেয়া হলেও মুল সমস্যার কোন সমাধান হয়নি।