সংশোধন হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি
সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ বাড়াতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি পরিবর্তন করা হচ্ছে। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে এই পরিবর্তন আনা হবে। এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংক্রান্ত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানিতে বাধ্যবাধকতা, দাম নির্ধারণসহ বিভিন্ন সংশোধনী আনা হচ্ছে।
বর্তমান নীতিতে শুধু সরকারি জমিতেই বড় আকারে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্তাপন করার নিয়ম আছে। কিন্তু এখন বিষয়টি উম্মুক্ত করা হবে। বেসরকারি উদ্যোক্তারা তাদের ইচ্ছেমত স্থানে জমি নির্বাচন করে সৌর অথবা বায়ু বিদ্যুৎ করতে পারবে।
সূত্র জানায়, সরকারি জমিতে কেন্দ্র করার বাধ্যবাধকতা থাকায় বেসরকারিখাতের প্রসার ঠিকভাবে হচ্ছে না। এজন্য তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া বর্তমান নীতিতে সৌর বা বায়ু বিদ্যুতের দাম ঠিক করা নেই। নতুন নীতিতে দাম নির্ধারণের পদ্ধতি ঠিক করা হবে। বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎ কেনার কোন দর নির্ধারন করা নেই। নতুন নীতিতে এই দর নির্ধারন করা হবে। সরকারি ত্রক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি চূড়ান্তভাবে এই দর ঠিক করবে।
বর্তমান নীতিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুতের দাম নিয়ে কোন দিকনির্দেশনা নেই। এজন্য বেসরকারিভাবে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে তা জাতীয গ্রীডে দেয়া যাচ্ছে না। অবশ্য বেসরকারিভাবে যে বিদ্যুৎ হচ্ছে তা এক অল্প পরিসরে যে তা জাতীয় গ্রিডে দেয়াও সম্ভব নয়। এজন্য বড় আকারে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে সব থেকে বড় বাধা জমি নিয়ে। বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে অনেক জমি প্রয়োজন হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট সৌর বিদ্যুৎ স্থাপন হলেও বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়নি। দেশে বর্তমানে ১০ লাখ সৌর বিদ্যুতের গ্রাহক আছে। বিভিন্ন এনজিও এবং নিজস্ব উদ্যোগে ছোট আকারে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া দেশের উপকূল জুড়ে বায়ু বিদ্যুতের প্রচুর সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায়। সেই সম্ভাবনার কিছুই কাজে লাগানো হয়নি। মাত্র এক মেগাওয়াটের একটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তা বর্তমানে পুরোপুরি চলে না।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি অনুযায়ি আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুতের ১০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে হবে। এরমধ্যে দুই হাজার মেগাওয়াট হবে সৌর থেকে। এছাড়া ২০২১ সালের মধ্যে এক হাজার ১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বায়ু থেকে উৎপাদন করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
বেসরকারি উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে এখনই ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব সরকারের কাছে আছে। যেখানে ২০ বছরের জন্য প্রতি ইউনিট ১৭ সেন্ট করে দর ধরা হয়েছে। এমন প্রস্তাব মৌখিকভাবেও অনেক আছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ২০০ মেগাওয়াটের এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে এক হাজার একর জমি প্রয়োজন হবে। বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতেও বেসরকারিভাবে কয়েকটি প্রস্তাব আছে।
এদিকে সৌর প্যানেল আমদানির জন্য নির্দিষ্ট নীতি না থাকায় বাজারে নিম্ন মানের প্যানেল আমদানি হচ্ছে। এতে প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহকরা। নতুন নীতিতে প্যানেল আমদানির জন্য মান নির্ধারণ করে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।