ইরাক-ইরানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত তিন শতাধিক
ইরাক ও ইরানের সীমান্ত অঞ্চলে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশ দুটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
রোববারে এই ভূমিকম্পটি ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ছিল বলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে; তবে ইরাকের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫।
ভূমিকম্পে আরো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন।
ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ইরান সীমান্তবর্তী ইরাকের আধা স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্থানের সুলাইমানিয়া প্রদেশের পেঞ্জভিনে। এলাকাটি ইরানের সঙ্গে প্রধান সীমান্ত ক্রসিংয়ের সন্নিকটে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে খবরে বলা হয়েছে, ইরানে অন্তত ৩২৮ জন নিহত ও ২,৫০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। উদ্ধাকারীরা ইরানের দুর্গম এলাকাগুলোতে পৌঁছানোর পর মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
ইরানের বেশ কয়েকটি প্রদেশে ভূমিকম্পটি অনুভূত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কেরমানশাহ প্রদেশে। কর্তৃপক্ষ প্রদেশটিতে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছে।
ইরাকি সীমান্তের প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কেরমানশাহের সারপোল ই জাহাব জেলায় ২৩৬ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এখানকার প্রধান হাসপাতালটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আহত শত শত মানুষকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে।
ভূমিকম্পে এখানকার কয়েকটি গ্রামে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে এতে বলা হয়েছে। গ্রামগুলোতে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা ইটের বাড়িগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া জীবিতদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
ভূমিকম্পের কারণে অন্তত ১৪টি প্রদেশে ভূমিধস হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
ইরাকের কুর্দিস্থানের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেখানে অন্তত চারজন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
ভূমিকম্পে ইরাকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুলাইমানিয়া শহরের ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর দারবান্দিখান। এখানে ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুর্দিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেকবত হামা রাশীদ।
এই ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর দিয়ারবাকিরও কেঁপে ওঠে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে থেকে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত খবর পাওয়া যায়নি।
ইরানের ভূমিকম্প বিষয়ক কেন্দ্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১১৮টি পরাঘাত রেকর্ড করেছে তারা এবং আরো পরাঘাত হবে বলে আশঙ্কা করছে। ইরানি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষের জরুরি আশ্রয় দরকার।