বদলে যাচ্ছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নাম

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নাম বদলে যাচ্ছে। এ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় পরিবেশ কমিটির চতুর্থ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান।
বৈঠক শেষে ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নামের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি যুক্ত হবে। নতুন নাম হবে ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন’ মন্ত্রণালয়।’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহামুদ, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল হাসান ও পরিকল্পনামন্ত্রী আ ফ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
নিয়ম অনুযায়ী, পরে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে প্রজ্ঞাপণ জারির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। তবে কেন এ পরিবর্তন, সে বিষয়ে কোনো কারণ ব্যাখ্যা দেননি ইহসানুল করিম। তিনি জানান, বৈঠকে ‘জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৭-এর খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জাতীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনার খসড়াও অনুমোদন পেয়েছে।
এর আগে ২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিবেশ কমিটির তৃতীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও এদিন পর্যালোচনা হয়।
প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে মোংলা বন্দর এলাকায় পরিবেশবান্ধব নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান করার অনুমোদন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে পরিকল্পিত উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে কৃষি জমি রক্ষার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- উন্নয়ন হতে হবে খুবই পরিকল্পিত।’ প্রেস সচিব বলেন, ‘চাষের জমি রক্ষার পাশাপাশি অহেতুক গাছ না কাটা এবং নতুন আবাসন এলাকা ও শিল্পাঞ্চলে জলাধার রাখার কথা বলেছেন সরকার প্রধান। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ওপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলে উপকূলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। সুন্দরবনকে সৃষ্টিকর্তার উপহার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি নতুন বনায়নের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।’
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জীবিকা নির্বাহের জন্য কেউ যাতে সুন্দরবনের গাছ না কাটে, সেজন্য ওই এলাকায় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হয়েছে।’
অতিবৃষ্টিতে জনভোগান্তির কথা বৈঠকে এলে প্রধানমন্ত্রী এর ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বলেন, ‘অতিবৃষ্টি নদীর দূষণ রোধ করার পাশাপাশি লবণাক্ততা কমায়।’ নদী রক্ষায় বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দূষণ এড়ানো না গেলে নদী নষ্ট হয়ে যাবে। ঢাকাকে ঘিরে থাকা বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ নদী দূষণমুক্ত রাখতে হবে।’ বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ২২ শ্রাবণে প্রয়াণ দিবসে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করেন। কৃষকদের উন্নয়নে কবিগুরুর বিভিন্ন কাজের কথাও তিনি এ সময় তুলে ধরেন।