ইরাকে তেলক্ষেত্র দখল নিয়ে লড়াই
বাইজি শহরে অবস্থিত ইরাকের বৃহত্তম তেল শোধনাগারটির নিয়ন্ত্রণ নিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়ছে ইরাকি বাহিনী। বুধবার শোধনাগারটির ৭৫ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা। গতকাল সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, জঙ্গিদের ক্রমাগত আক্রমণ প্রতিহত করেছে সেনাবাহিনী। বুধবার দিন ও রাতে অন্তত ৪০ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে তেল শোধনাগারটির কর্মীরা জানিয়েছেন, এর বেশিরভাগ এলাকাই নিয়ন্ত্রণ করছে জঙ্গিরা। নিরাপত্তাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তবে গতকালই প্রধানমন্ত্রী নূরি আল মালিকির একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন তেলক্ষেত্রটির পূর্ণনিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সরকারি বাহিনী। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের।
গত সপ্তাহে ইরাকের বেশ কিছু এলাকা জঙ্গিদের দখলে চলে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ওবামা দেশটিকে সামরিক সহায়তার ঘোষণা দেন। কীভাবে ওবামা ইরাককে সহায়তা দিতে চান, তা জানতে বুধবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কংগ্রেসের উভয় কক্ষের শীর্ষ নেতারা। সেখানে ওবামা তাদের জানান, ইরাকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে তার আইনপ্রণেতাদের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন হবে না। হোয়াইট হাউসে ওবামার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সিনেটর মিচ ম্যাককনেল এ তথ্য জানান। ম্যাককনেল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আমাদের এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ইরাক বিষয়ে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অনুমোদনের প্রয়োজন তার হবে না।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরাক ইস্যুতে ওবামার সামনে অনেকগুলো পথই খোলা আছে। আল কায়দা ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে লড়তে কংগ্রেসের ২০০১ সালের আইন অথরাইজেশন ফর দ্য ইউজ অব মিলিটারি ফোর্স (এইউএমএফ) এবং ইরাক আক্রমণের আগে পাস করা এইউএমএফ আইনের আশ্রয় নিতে পারেন ওবামা। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে নিজের ক্ষমতারও ব্যবহার করতে পারেন তিনি। বুধবারই ইরাক জঙ্গিদের ওপর বিমান হামলা চালাতে ওবামা প্রশাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ওই অনুরোধের সূত্র ধরে ওবামা এককভাবে ইরাক ইস্যুতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ইরাকে ১০০ বিশেষ সেনা পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মালিকি সে বিষয়ে রিজার্ভ সেনাদের দায়িত্বে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে নিনিভা প্রদেশসহ বেশ কিছু শহর দখল করে নেয় সুন্নি মতাবলম্বী ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ত (আইএসআইএল)। সম্প্রতি রাজধানী বাগদাদের ৬০ কিলোমিটার দূরের শহর বাকুবা দখলে লড়াই করছে স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস)। ইরাকের বৃহত্তম তেল শোধনাগার দখলেও লড়ছে তারা।